সাপলেজায় শিক্ষার্থী নির্যাতনকারী শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সাপলেজা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষকের বেতের আঘাতে জিহাদ (১৬) নামের এক ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর একটি চোখ হারানোর আশংকায় জড়িত শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে মানবন্ধন করেছে অভিভাবকরা। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জড়িত শিক্ষক গোলাম রব্বানী লিটনকে দ্রুত গ্রেফতার ও তার বিচার দাবী করে মঠবাড়িয়া-সাপলেজা সড়কের স্থানীয় সাপলেজা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখ সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে শিক্ষার্থীর স্বজন, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীসহ শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। পরে মানববন্ধন শেষে তারা সাপলেজা বাজারের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে চৌরাস্তা মোড়ে এক সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন আহত শিক্ষার্থী জিহাদ এর বড় ভাই রুম্মান, অভিভাবক মালেকা বেগম, সোহরাপ বেপারী ও তানিয়া বেগম প্রমূখ।
আহত জিহাদ উপজেলার সাপলেজা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ও সাপলেজা গ্রামের সৌদি প্রবাসী বাবুল বেপারীর ছেলে।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে আহত জিহাদের বড় ভাই রুম্মান বাদী হয়ে ওই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গোলাম রব্বানীকে একমাত্র আসামী করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করলে খবর পেয়েই শিক্ষক লিটন ঘা ঢাকা দেয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়- গত ২৫ আগস্ট’১৯ সকালে সাপলেজা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম রব্বানি লিটন এর কাছে ইংরেজী গ্রামার প্রাইভেট পড়ার সময় বেত দিয়ে আঘাত করলে জিহাদের বাম চোখে পড়ে। এতে জিহাদ গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে খুলনা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে জিহাদ গত একমাস ধরে ঢাকা হারুন আই ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে দ্রুত অপরেশন না হলে তার বাম চোখ নষ্ট হতে পারে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায় তাদের আর্থিক সংগতি না থাকায় দ্রুত চোখের অপারেশনও হচ্ছে না। ফলে দিন দিন তার অবস্থার অবনতি ঘটছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম রব্বানি লিটন মুঠোফোনে ওই ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হানিফ বেল্লাল নামের দশম শ্রেণীর অপর এক ছাত্র গ্রামার লিখে না আনায় তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে চাইলে নড়াচড়া করায় পাশে বসা জিহাদের চোখে পড়ে। তাৎক্ষণিক তিনি তাকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন বলে দাবী করেন। তিনি আরও বলেন সামান্য এ ঘটনাটি স্থানীয় দলাদলির কারনে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে।
সাপলেজা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাশেদ জানান, এ ঘটনার দীর্ঘ ১মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে এ বিষয়ে ম্যনেজিং কমিটি ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করে সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিরাজ মিয়া শিক্ষকের বেতের আঘাতে ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন- বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রতিটি সভায় শিক্ষকদের কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানো নিষেধ করা হলেও কতিপয় শিক্ষকরা তা মানছে না। যে কারণে এ অনাকাংখিত ঘটনাটি ঘটছে। তিনি আরও বলেন এ বিষয় মামলা হয়েছে। আইনে যা হয় তা হবে।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- জড়িত শিক্ষক ঘা ঢাকা দেয়ায় তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। তারপরও তাকে গ্রেফতারের জোর পুলিশি তৎপরতা অব্যহত রয়েছে।
Comments
আরও পড়ুন





