সদর ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি থেকে আ’লীগে যোগ দিয়ে জমি দখল ও নির্যাতন চালাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ৫নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম ফারুক হাসান কর্তৃক গায়ের জোরে একটি দরিদ্র পরিবারের জমি জবর দখল, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে। এ ব্যাপারে উত্তর মিঠাখালী গ্রামের কৃষক আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী শিল্পী বেগম বুধবার (১০ জুন) দুপুরে মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে নির্যাতিত গৃহবধূ শিল্পী বেগম বলেন, মঠবাড়িয়া সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর মিঠাখালী গ্রামে তার স্বামী আনোয়ারুল ইসলামের পৈত্রিক ৯ কাঠা জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। ওই জমির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রতিবেশী ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনের। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বসতির জমি দখল করে আমাদের উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতিপূর্বে ২০০৯ সালে চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসী দলবল স্থানীয় মাঝেরপুল বাজার সংলগ্ন ৫ কাঠা জমি জবর দখল করে রাতের আঁধারে সেখানে ঘর উত্তোলন করে দখলে নেয়। চেয়ারম্যানের জবর দখলকৃত ৫কাঠা জমির প্রকৃত মালিক গৃহবধূর চাচা শ্বশুর হযরত আলীর পৈত্রিক সম্পত্তি। যা তার স্ত্রী ময়না বেগম ভোগদখল করে আসছিলেন। চেয়ারম্যানের হুমকী ধামকি ও প্রাণনাশের ভয়ে ওই জমি উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছেনা। বর্তমানে এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।
সংবাদ সম্মেলনে ওই গৃহবধু আরও অভিযোগ করেন, গত ১১/০৩/২০২০ ইং তারিখ চেয়ারম্যান স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ওই জমি তার দাবী করে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অন্যায় ভাবে গৃহবধূ শিল্পী বেগমের ঘরের মিটার খুলে নিয়ে যায়। এতে তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুত বিহীন হয়ে রয়েছেন। ঘরের বিদ্যুত লাইনের তার ও আনুষাঙ্গিক মালামাল চেয়ারম্যানের লেলিয়ে দেওয়া লোকজন চুরি করে নিয়ে যায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ০২জুন দুপুর ১২টার দিকে চেয়ারম্যান ফারুক হাসান ও তার তিন সহযোগিরা মিলে বাড়ির সীমানার বেড়া ভাংচুর শুরু করে। এসময় বাঁধা দিতে গেলে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার স্বামী আনোয়ারুল ইসলামকে হামলাকারিরা মাছ ধরা কোচ দিয়ে কোপানোর চেষ্টা চালায়। একপর্যায় তারা আমার স্বামীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। চেয়ারম্যান ফারুক হাসান বাদি হয়ে ভূক্তভোগি স্বামী আনোয়ারুলকে প্রধান আসামী করে দুইজনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে তদন্ত ছাড়াই পুলিশ আমার স্বামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। তিনি আরও বলেন, উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা চেয়ারম্যান ফারুক হাসান কয়েকমাস আগে আ’লীগে যোগদান করে আমাদের ওপর অত্যাচার ও হুমকির মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে আমরা গোটা পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে গৃহবধুর দেবর মিজানুর রহমান জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চেয়ারম্যান ফারুক হাসান ও তার দুই সহযোগির বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। যার নম্বর- ৩৮৩, তারিখ-০৮/০৩/২০২০।
ভূক্তভোগি গৃহবধূ ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হাসানের অত্যাচার নিপীড়ন ও বসত ভিটা হতে উচ্ছেদের ব্যাপারে সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম ফারুক হাসান তার বিরুদ্ধে জবর দখল ও হয়রানীর অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বলেন, ওই জমির কিছু অংশ আমার পৈত্রিক এবং প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ক্রয় করা সম্পত্তি। প্রতিপক্ষ ভুয়া কাগজ দিয়ে ওই জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে এবং আমার বিরুদ্ধে দুর্ণাম ছড়াচ্ছে।
Comments
আরও পড়ুন





