মানবিক উদ্যোগ ॥ আহত এতিম শিশুর পাশে দাড়িয়েছে প্রশাসন ও একঝাঁক সাংবাদিক

স্টাফ রিপোর্ট : মঠবাড়িয়ায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বিধবা মায়ের শিশু সন্তান শাহাদাৎ হোসেন (১০) গাছ থেকে পড়ে হাত-পা ভেঙ্গে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। কর্মরত চিকিৎসক ইতিমধ্যেই তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রেফার করেছে। বরিশাল নেয়ার সামর্থ্য না থাকায় বিধবা মা শাহানাজ পাশে বসে কাঁদছে। এমনি সময় পেশাগত কাজে একদল সাংবাদিক হাসপতালের জরুরী বিভাগে ঢোকে। মায়ের কান্না ও অজ্ঞান শিশুকে দেখে তার খোজখবর নেয় উৎসুক সাংবাদিকরা। বেড়িয়ে আসে শিশু বাচ্চাটির জীবিকা নির্বাহের বিভিন্ন পেশার কথা।
জানা যায়, উপজেলার সুর্যমনি গ্রামের শাহনাজ বেগমের স্বামী হতদরিদ্র ছগির মিয়া গত ৫/৬ বছর আগে মারা যায়। এরপর শাহনাজ শিশু দুটি পুত্র সন্তান নিয়ে পরের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালায়। বড় পুত্র শাহাদাৎ হোসেন টিকিকাটা ইউনিয়নের ৬৪ নং বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণীতে পড়ে। মায়ের আয় দিয়ে সংকুলন না হওয়ায় পড়ার পাশাপাশি সে এবাড়ীতে ওবাড়ীতে কাজ সহ সুপারির মৌসুমে প্রতিটি ১০ টাকায় গাছ বেয়ে যা পায় তা দিয়ে সংসার ও পড়াশুনার খরচ চালায়। আজ সোমবার বিকেলে প্রতিদিনের ন্যায় পাশের বাড়ীর মরিয়মের ১০/১২টি সুপারিগাছ থেকে সুপারি পেড়ে শেষ গাছ থেকে নামার সময় অসাবধানতা বশত: পড়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোনিয়া আক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয় সাংবাদিকরা তার এ অসহায়ের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি চিকিৎসা খরচের জন্য সরকারি সাহায্য তহবিল থেকে ২ হাজার ৫শ টাকার আশ্বাস দিলে সমকালের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান মিজু ওই টাকা নিজ পকেট থেকে ওই শিশুর মা শাহনাজ বেগমের হাতে তুলে দেন। এছাড়া তাৎক্ষণিক ভাবে সাংবাদিকরা উদ্যোগ নিয়ে নিজেরা, প্যানেল মেয়র মঞ্জুর রহমান সিকদার, টিকিকাটা ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু হানিফ ও উপস্থিত সকলের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে চিকিৎসার জন্য মোট ১৮ হাজার টাকা দিয়ে তাকে সোমবার রাতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বশির আহমেদ জানান, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবহিত হয়ে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিএম সরফরাজ জানান, এটি একটি সাংবাদিকদের মহতি উদ্যোগ। আমি মুঠোফোনে খবর পেয়ে সাংবাদিকদের পাশাপাশি আমিও ওই অসহায় শিশুটির পাশে দাড়িয়েছি।
উপজেলা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের এ উদ্যোগ সকলের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
Comments
আরও পড়ুন





