মঠবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর বেহাল দশা ॥ চিকিৎসা সেবা ব্যহত

স্টাফ রিপোর্টারঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশ ভবনেরও বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ঝুকির মধ্যেই চালাতে হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম। পাশাপাশি ক্লিনিকে যাতায়াতের রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানি সংকট, ও টয়লেটের সু-ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই রোগী ও হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডারদের সমস্যায় পড়তে হয়।
উপজেলার সাপলেজার হাজীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন কাদের মাওলানা বাড়ি, উত্তর মিঠাখালী (মাঝেরপুল), পশ্চিম মিঠাখালী, তুষখালী ইউনিয়নের বান্ধাঘাটা, ধানীসাফার তেতুলতলা, দেবত্রসহ বেশ কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের ছাদে বড় বড় ফাটল ধরেছে, দেয়ালের পলেস্তরা খসে রড বের হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে মেঝেতে পানি পড়ছে। ফ্লোর দেবে যাওয়ায় গ্রাম থেকে আসা রোগীরা দারুন দূর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। টয়লেটগুলো ব্যবহারের জন্য পানির ব্যবস্থ্ ানা থাকায় রোগীরা টয়লেট ব্যবহার করতে পারছে না। এছাড়া অধিকাংশ ক্লিনিকেই নেই কোন বিদ্যুৎ সংযোগ। অবকাঠামোগত সমস্যাসহ বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) তাদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি মাসিক প্রতিবেদন তৈরীসহ নানা কাজে সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছেন।
ঠান্ডাজনিত সমস্যার চিকিৎসা নিতে আসা তেতুলতলা কমিউনিটি ক্লিনিকে বৃদ্ধা রিনা বেগম জানান, “ক্লিনিকে আইতে ভয় লাগে বাবা। কোন সময় বিল্ডিং ভাইঙ্গা চাপা পরি”
তুষখালীর বান্ধাঘাটা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি গোপাল চন্দ্র তালুকদার জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫০/৬০ জন রোগীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকি। ক্লিনিকের সংকীর্ণ এ রুমে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া রাস্তা না থাকায় বর্ষার সময়ে রোগীদের ক্লিনিকে আসতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
তেতুলতলা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা জীবন কৃষ্ণ সরকার বলেন, পুরনো ভবন হওয়ায় ক্লিনিকে নানা সমস্যা লেগেই আছে। দরজা-জানালা ভাঙা বিধায় ক্লিনিকে ওষুধ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখা ঝুকিপূর্ন। এছাড়া নেই কোন প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র।
কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি কমিটির সভাপতি বনি আমীন জানান, পুরনো ও ঝুকিপূর্ন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারের জন্য এ বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জামাল মিয়া শোভন জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর অধিকাংশই সংস্কার করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সাপলেজা কাদের মিয়াবাড়ি ও মাঝেরপুল কমিউনিটি ক্লিনিক পুণ নির্মানের টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ক্লিনিকগুলো সংস্কার করা হবে।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেবার লক্ষে ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। সেই থেকে ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যান সহকারীরা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসলেও ২০০১ সালের পরে তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুনরায় কমিনিউটি ক্লিনিকগুলো চালু করে প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে সিএইচসিপি নিয়োগ দেয়া হয়। সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যান সহকারীদের সমন্বয়ে ওই সকল কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
Comments
আরও পড়ুন





