মঠবাড়িয়ায় ২৫ শহীদদের গ্রাম সূর্যমণিতে আজও নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ

মঠবাড়িয়া সংবাদ ডেস্ক: মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছরেরও মঠবাড়িয়ার সূর্যমনি বধ্যভূমিতে স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে ওঠেনি। যুদ্ধের শেষ সময়ে উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের ২৫ হিন্দু যুবককে এক দড়িতে বেঁধে স্থানীয় সূর্যমণি বেঁড়ি বাঁধে দাড় করিয়ে রাজাকার বাহিনীরা নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও ওই শহীদ বেদীতে আজও (বর্তমান সøুইজগেট) গড়ে ওঠেনি স্মৃতিস্তম্ভ। এমনকি ওই গুলি খেয়ে বেচে যাওয়া আহতরা সরকারী ভাঁতা পেলেও নিহত ২৫ শহীদদের পরিবার আজও পায়নি সরকারী স্বীকৃতি।
শহীদ পরিবার সূত্রে জানাগেছে, ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর ভোর রাতে মঠবাড়িয়া সদর ইউনিয়নের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আঙ্গুলকাটা গ্রামে ৫০/৬০ জনের সংগঠিত একটি রাজাকার বাহিনী ওই গ্রামের হানা দিয়ে ব্যাপক ধরপাকড় ও লুটপাট চালায়। এসময় ৩৭ জন হিন্দু বাঙালীকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে ধরে এনে তাঁদের মধ্যে ৭ জনকে রাতভর থানায় আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালানো পর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকী ৩০ জনকে মঠবাড়িয়া শহর হতে আড়াই কিলোটিার দূরে মঠবাড়িয়া-–বামনা সড়কের পাশে স্থানীয় সূর্যমণি বেড়িবাঁধ সংলগ্ন খালের পাড়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। এ সময় ভাগ্যক্রমে গুলি খেয়ে বেঁচে যায় পাঁচ জন। বাকী ২৫ জন ঘটনাস্থলেই শহীদ হন।
স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ২৫ শহীদের রক্তে রঞ্জিত সূর্যমনি গ্রামে ওই বধ্যভূমিতে আজও নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ। এমনকি এই জীবনদানের যথাযথ স্বীকৃতিও পায়নি শহীদ পরিবারগুলো। তবে ওই স্থানে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার জন্য ২০০১ সালের ৭ জানুয়ারী তৎকালীন বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী আ.খ.ম জাহাঙ্গীর হোসেন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু বিজয়ের এতকাল পরেও সরকারের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে শুধু মাত্র ফুল দেয়া ছাড়া কিছুই করা হয়নি।
শহীদ বিরাংশু কুমার হালদারের ছেলে বিকাশ চন্দ্র হালদার ক্ষোভের সঙ্গে জানান, মুক্তিযুদ্ধে আমরা স্বজনহারা হয়েছি। তবে শহীদ পরিবারগুলোর প্রতি কেউ নজর দেয়নি। গণহত্যার স্থানে আজও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হলনা, এই উপেক্ষা দুঃখজনক।
ভাগ্যক্রমে গুলি খেয়ে বেঁচে যাওয়া সন্তোষ হালদার জানান, আহত হয়ে সরকারী ভাতা পেলেও শহীদ পরিবারগুলো সম্মান ছাড়া কিছুই পায়নি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাঊেশ কমান্ডার বাচ্চু মিয়া আকন বাড়ি থেকে ধরে এনে এদেরকে হত্যা করা হয় স্বীকার করে বলেন, এদের পরিবার ভাঁতা পায়না তবে ১৬ ডিসেম্বর শহীদ পরিবারের লোকজনকে শান্তনা পুরস্কার দেয়া হয়।
Comments
আরও পড়ুন





