মঠবাড়িয়ায় ভূয়া এতিমের নামে বিল না দেয়ায় সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে পিটিয়ে যখম

স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ভূয়া এতিমের নামে সরকারী অর্থের বিল না দেয়ায় ওই এতিম খানার সভাপতি ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে রোববার বিকেলে পিটিয়ে যখম করেছে। গুরুতর আহত সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. আখলাকুর রহমানকে সরকারী কর্মকর্তারা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এঘটনায় থানা পুলিশ দাউদখালী ইউনিয়নের বড়হারজী গ্রামের হাজী গুলশান আরা শিশু সদন এর সভাপতি মোঃ আবদুল গফ্ফার (৬০) ও এতিম খানার শিক্ষক মাওলানা মোস্তফা মাহামুদ (৫০) কে আটক করেছে।
আহত সমাজ সেবা অফিসার জানান, উপজেলার বড়হারজী গ্রামের কাঞ্চন আলী হাওলাদারের পুত্র আ. গফ্ফার খোকন ওই গ্রামে “হাজী গুলশান আরা শিশু সদন” নামে ২০২ জন এতিম দেখিয়ে ১০১ জনের প্রতি বছর ১২ লাখ টাকা সরকারী বরাদ্দ তুলে আত্মসাৎ করে আসছিল। সম্প্রতি ওই এতিম খানার বিরুদ্ধে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধ আলতাফ মাহামুদ ভূয়া এতিম দেখিয়ে সরকারী লক্ষ লক্ষ টাকার আত্মসাৎ এর অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দায়ের করে। ইউএনও এর পক্ষে সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ সোহাগ হাওলাদার সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন ও তদন্ত করে ওই এতিম খানায় মাত্র ৪১ এতিম উপস্থিত পায়। এ বিষয়ে ভূয়া এতিমের নামে বর্ধিত বরাদ্দ বাতিলের সুপারিশ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করে। গত ৬ মাসের সরকারী অনুদানের ৬ লাখ টাকা বিল চেয়ে রোববার বিকেলে ওই এতিম খানার সভাপতি গফ্ফার সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে চাপ প্রয়োগ করে। সমাজ সেবা অফিসার ওই বিল দিতে অস্বীকার করে। এসময় সভাপতি তার ৫/৬ জন ভাড়া করা সন্ত্রাসী উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরে প্রবেশ করে চাপাতি ও হাতুরী দিয়ে এলোপাতারি পিটিয়ে সমাজ সেবা অফিসারকে গুরুতর আহত করে এবং অফিস, কম্পিউটারসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর কর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চাপাতি ও হাতুরী উদ্ধার করে। হামলার সময় গোটা উপজেলা পরিষদে আতংক ছড়িয়ে পরে। অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সু-কৌশলে গফ্ফার ও তার সহযোগী মাওলানা মোস্তফা মাহামুদকে একটি কক্ষে আটকে রাখলেও অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

মঠবাড়িয়া থানার ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) মাজহারুল আমিন (বিপিএম) দু’জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. সোহাগ হাওলাদার জানান, উপজেলা পরিষদের একজন সরকারী কর্মকর্তা দপ্তরে প্রবেশ করে হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে মারধর ও ভাংচুরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
Comments
আরও পড়ুন





