মঠবাড়িয়ায় ইউপি মেম্বর শাহ আলম হত্যার দায়ে ৭ জনের যাবজ্জীবন
স্টাফ রিপোর্টার: মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের পশ্চিম ফুলঝুড়ি গ্রামের শাহ আলম (৪৮) নামের এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে হত্যার দায়ে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এ দন্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। সোমবার (২৬ আগষ্ট) দুপুরে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মান্নান এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের আলম মোল্লা (৩৪), একই উপজেলার বাদুরা গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন পঞ্চায়েত (৩৪), পাঠাকাটা গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদার (৩৯) ও ইলিয়াস হাওলাদার (৩৪), বকসির ঘটিচোরা গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন (২৯), ধানীসাফা গ্রামের আবদুর রহিম (৩৪) ও সাফা গ্রামের মো. বাচ্চু তালুকদার (৩৪)।
নিহত শাহ আলম ধানীসাফা ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ফুলঝুড়ি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম সৈজদ্দিন হাওলাদারের পুত্র।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৬ জুলাই রাত দুইটার দিকে পশ্চিম ফুলঝুড়ি গ্রামের ফিরোজ ফরাজীর বাড়িতে একদল সশস্ত্র ডাকাত হানা দেয়। এ সময় ওই বাড়ীর লোকজন ডাকাত ডাকাত চিৎকার দিলে প্রতিবেশী ইউপি সদস্য শাহ আলম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ফিরোজের বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছালে ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দলের মুখোমুখি হন তিনি। তারা তাকে সড়কের ওপর ফেলে মারধর করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরের দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৯ জুলাই রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহ আলম মারা যান।
ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই স্থানীয় তুষখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মঠবাড়িয়া প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক এইচএম আকরামুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১২ ডাকাত সদস্যকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনক ভাবে দেলোয়ার হোসেন, ইদ্রিস হাওলাদার ও মোস্তফাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আসামীরা আদালতে এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার ১৬ জন স্বাীর স্ব্যা গ্রহণ শেষে বিচারক পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। আসামি ইদ্রিস হাওলাদার ও বাচ্চু তালুকদার পলাতক। এ ছাড়া মোস্তফা নামের এক আসামি মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার বাদী এইচএম আকরামুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ রায়ে খুশি।’
সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আহসানুল কবির।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আহসানুল কবির বলেন, ‘আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
Comments
আরও পড়ুন





