বসত বাড়ি সংলগ্ন অবৈধ ইট পাঁজা ॥ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও ফল পায়নি অবশেষে ক্ষতিগ্রস্থের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার আঙ্গুলকাটা গ্রামে অসহায় এক দিন মজুরের বসত বাড়ির উঠানের জমি জোর পূর্বক দখল করে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে ইট পোড়ানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত দিনমজুর অবৈধ পাঁজা বন্ধে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাননি। বরং শুক্রবার (৬ এপ্রিল) অবৈধ পাঁজার মালিক কথিত ডাকাত হাবিব জমাদ্দার ও তার শ্রমিকরা জমির মালিক দিন মজুর বাদশা খাঁ (৫৮) এর ফলদ গাছ কেটে নতুন করে থরে থরে ইট সাজাতে শুরু করে। এ সময় জমির মালিক গৃহকর্তা প্রতিবাদ করলে বাক-বিতন্ডের একপর্যায় দস্তাদস্তিতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। স্বজনরা ওই দিন দুপুরে অজ্ঞান অবস্থায় বাদশা খাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করেন। বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাদশা খাঁ মারা যান। ৫ সন্তানের জনক বাদশা খায়ের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এদিকে অসহায় ওই পরিবারকে জমি ছেড়ে দেওয়া ও ওই স্থানে ইট না পোড়ানোর মৌখিক আশ্বাসে শনিবার সকালে প্রভাবশালী একটি মহলের ইন্দনে ইটের পাঁজার মালিক হাবিব জমাদ্দার তড়িগড়ি করে বাদশার খাঁয়ের লাশ দাফন করে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, আঙ্গুলকাটা গ্রামের অসহায় দিনমজুর বাদশা খাঁয়ের বসত বাড়ির উঠানে গত দু’বছর ধরে হাবিব জমাদ্দার জোর পূর্বক পাঁজায় ইট পোড়ান। এতে দিনমজুর বাদশা খাঁয়ের নারিকেল, সুপারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আগুনের তাপে নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ পাঁজার মালিক হাবিব জমাদ্দার একজন দস্যু প্রকৃতির লোক। তার ভয়ে এলাকার কোন মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
নিহতের পুত্র ইব্রাহিম বাবু (১৪) অভিযোগ করে বলেন, যখনই আমরা এর প্রতিবাদ করেছি, তখনই আমাদেরকে জ্বলন্ত ইটের পাঁজায় নিক্ষেপ করে পুড়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
নিহত বাদশার ছোট ভাই হতদরিদ্র এমাদুল হক খাঁ অভিযোগ করে বলেন, পাঁজা বন্ধ করার জন্য নিহত বড় ভাইকে নিয়ে ৩/৪ দিন পূর্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাইনি।
নিহতের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৪০) জানান, তার স্বামী কিছু দিন ধরে অসুস্থ্য থাকায় তিনি মঠবাড়িয়া পৌরশহরে তরকারি বিক্রি করে ৭ সদস্যের সংসার পরিচালনা করেন।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি,এম, সরফরাজ জানান, নিহত বাদশা খাঁয়ের অভিযোগ পেয়ে ইটের পাঁজার মালিক হাবিব জমাদ্দারকে ডেকে আনি। ওই স্থানে আর ইট পোড়াবেনা এ মর্মে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেই।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম ছরোয়ার জানান, বাদশা খায়ের নিহতের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। কিন্তু নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না পাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Comments
আরও পড়ুন





