পুড়ছে ফলদ গাছ ॥ জ¦র ও শ্বাসকষ্টে ভূগছে শিশু ও বৃদ্ধরা, ইটভাটা বন্ধের দাবিতে গ্রামবাসির মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালীর ইটভাটার তাঁপে বনজ ও ফলদ গাছ পুড়ে পরিবেশ হুমকি মুখে পরেছে। ওই ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকায় বসবাসকারী অর্ধশত শিশু ও বৃদ্ধরা জ¦র ও শ্বাস কষ্টে ভুগে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। কালো ধোঁয়ায় জনস্বাস্থ্য হুমকীর মুখে পড়ায় ওই ইটভাটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসি। শনিবার (১১ মে) দুপুরে উপকুলীয় উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের বলেশ^র নদ তীরবর্তী ছোটমাছুয়া বেড়ি বাঁধের ওপর এ মানববন্ধনে ভূক্তভোগি এলাকার নানা বয়সী দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন, সাবেক ইউপি সদস্য মো. ছগীর মিয়া, জেলে মো. মনির হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. ফজলুল হক, কৃষক আলমগীর হোসেন, মো. শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি প্রমূখ।
সমাবেশে বিক্ষুব্দ গ্রামবাসি অভিযোগ করেন, গত ১০ বছর ধরে ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী সাঈফ ওরফে সোহেল লস্কর বলেশ^র নদীর তীরের খাস জমি ও স্থানীয় কয়েক কৃষকের জমি জবর দখল করে এলবিবি নামে ইটভাটা গড়ে তোলেন। নদী তীরের মাটি কেঁটে নিয়ে ইট তৈরী করে পরিবেশের ক্ষতি করছে। ওই ইটভাটার ধোঁয়ায় ছোটমাছুয়া গ্রামে বৃক্ষরাজি পুড়ে যাচ্ছে। ফলে ফলদ গাছের ফল ঝড়ে পড়ছে। এছাড়া ধোঁয়ায় আড়াইশ পরিবারের ওই গ্রামবাসি চরম শ্বাস কষ্টে পড়েছেন। এমনকি শ্বাস কষ্ট ও জ¦রে গত ৪ দিনে অন্তত অর্ধশত শিশু ও বৃদ্ধ অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে।
ছোটমাছুয়া গ্রামে সরজমিনে গেলে, জেলে সুলতান (৭০) জানান, গত তিনদিন আগে হঠাৎ করে চুলার গ্যাস বের করে দেয়ায় তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। কোন অসুধে কাজ হয়না বলে জানান। জেলে কালন মিয়া অভিযোগ করে তার মেয়ে সালমা (১২) ও পুত্র জাহিদুল (৩) অসুস্থ্য হয়ে পড়লে গত তিনদিন ধরে মঠবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো: ফজলুল হক অভিযোগ করে বলেন, এলবিবি’র মালিক যুবলীগের নেতা হওয়ায় ওই ভাটির মধ্যে থাকা তার ৬৬শতক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় কবির খলিফা (৩৫) ও বশির ফরাজী (৩২) অভিযোগ করেন, ইটের ভাটির কালো ধোঁয়ায় তাদের ফলদ বাগানের ফল গত তিনদিন ধরে ঝড়ে পড়ছে। ওই গ্রামের হেমায়েতের পুত্র মনির হোসেন (৩০) অভিযোগ করেন, মানুষ ভাটা করলে মাটি ক্রয় করে ভাটা করে কিন্তু এলবিবি’র ভাটার মালিক ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে নদীর মাটি কেটে ভাটা করছেন। বর্তমানে ইটভাটার আগ্রাসনে গ্রামবাসি জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের চরম বিপর্যয়ের আশংকা করেছেন। গ্রামবাসি নদী তীরের তিনটি ইটভাটা দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাঈফ ওরফে সোহেল লস্কর তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভাটির ধোয়ার কারনে গাছের দু’একটি পাতা ঝড়ে পড়তে পারে এবং নদীর মাটি কাটা সম্পর্কে বলেন, ওই জমি আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তি।
Comments
আরও পড়ুন





