খাল কেটে খাল ভরাট করে দখলের চেষ্টা ॥ ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার: মঠবাড়িয়া উপজেলার হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় হলতা খাল খনন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যপারে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক কবুতরখালী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক পরিতোষ গোমস্তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করলে সত্যতা পাওয়ায় খনন কাজ বন্ধ করে দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের গুলিসাখালী-কবুতরখালীর মধ্যবর্তী হলতা খালে সম্প্রতি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের ৪০ দিন কর্মসূচির আওতায় ২নং ওয়ার্ডের নুরু শিকদারের বাড়ি হতে রফিকের বাড়ি পর্যন্ত হলতা খাল খনন প্রকল্পে ১লাখ ৭৮হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়। সরকারী বরাদ্ধ পেয়ে প্রকল্প সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জুনায়েদুর রহমান জুয়েল সম্প্রতি খাল খননের কাজ শুরু করেন। ওই ইউপি সদস্য খাল কাটার সরকারী ডিজাইন ও নকশা অনুযায়ী না করে নিজের ইচ্ছামত মাটি কাটা শুরু করে।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) দুপুরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়- খালের পশ্চিম পাড় কবুতরখালী অংশ থেকে সুরঙ্গ করে মাটি কেটে পূর্ব পাড়ের গুলিসাখালী অংশ ভরাট করেছে। গুলিশাখালী অংশ পূর্ব পাড় খাল ভরাট করে করে সুপারী ও নারিকেল গাছ লাগিয়ে দখলের চেষ্টা করে ওই প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য। এদিকে খালের পশ্চিম পাড়ে খাড়া করে কাটায় বনজ গাছ-পালা খালে উপড়ে ও মাটি ভেঙ্গে পড়ছে। খালের মাটি কাটায় পাড়ের ডাল না রাখায় কবুতরখালী পাড়ের জনগোষ্ঠির আরও ব্যাপক ক্ষতির আশংকায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিধি সম্মতভাবে কাজ সম্পন্ন করেননি। এক পাড়ের মাটি কেটে অন্য পাড়ে উঠানোয় খালটি অনেকটা সংকুচিত হয়ে পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলেছে। এতে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
গুলিশাখালী গ্রামের বৃদ্ধ কৃষক সেকান্দার আলী (৭০) বলেন- নিয়ম মাফিক খাল না কেটে ওই পাশের মাটি এনে পূর্বপাশ ভরাট করায় খাল সংঙ্কুচিত হয়ে পানি প্রবাহ কমে গেছে। ফলে আমাদের পানি সমস্যা বাড়ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কবুতরখালী গ্রামের মিনতি রানী (৩৫) বলেন, সুরঙ্গ করে খাল কাটায় হিন্দু অধ্যুষিত কবুতরখালী অংশে ইতিমধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে গাছ পালা ভেংগে পড়ছে।
কবুতরখালী গ্রামের বাসিন্দা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্র বাসুদেব গোমস্তা বলেন, এর আগেও ওই খালে আরো দু’বার সরকারী বরাদ্ধ এনে কাজ করে খালের পূর্ব পাড় ভরাট করে দখলের চেষ্টা করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য জুনায়েদুর রহমান জুয়েল তালুকদার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পশ্চিম পাড় উচু হওয়ায় এবং গাছপালা থাকায় পূর্ব পাড়ে মাটি উঠানো হয়েছে। কাজ চলমান আছে কাজে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে ঠিক করে দেয়া হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম ঝনো বলেন, ওই খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। আমি গত কয়েকদিন ধরে এলাকার বাহিরে আছি। এলাকায় এসে সরেজমিনে তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রিপন বিশ্বাস জানান, অভিযোগ পেয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদারকে নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেই।
Comments
আরও পড়ুন





