ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বাল্য বিয়ে ॥ সেই বাল্য বিয়ের ঘটনায় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থীর বাল্য বিয়ের ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নিয়ে কনের প্রাপ্ত:বয়স না হওয়া পর্যন্ত দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করবে মর্মে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে প্রশাসন চলে গেলে ওই দিন রাতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে বর শিশু বধূকে নিয়ে চলে যায়। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাটি জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক দৈনিকসহ অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হলে ভাইরাল হয়।
চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বাল্য বিয়ের বিষয়টি মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় উত্থাপিত হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট শাখাওয়াত জামিল সৈকতকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার অচ্যুতানন্দ দাস ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিরাজ আহম্মেদ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) বশির আহম্মেদের সভাপতিত্বে ওই সভায় উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সকল সদস্যদের সম্মতিক্রমে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির বাল্য বিয়ের ঘটনা সাত দিনের মধ্যে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতেও বলা হয়।
সভা সূত্রে জানাযায়, উপজেলার দক্ষিণ বড়মাছুয়া গ্রামের মো. পারভেজ ইলিয়াসের মেয়ে ও স্থানীয় বড়মাছুয়া ইউনাইটেড হাই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী ইসরাত জাহান মিম (১৩) এর সাথে পশ্চিম রাজপাড়া গ্রামের মো. আবদুল খালেক হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হোসেন লিমন (৩০) এর বৃহস্পতিবার (২১ অক্টেবর) দুপুরে বিয়ের আয়োজন করা হয়। এই বাল্য বিয়ের নিমন্ত্রনপত্রে সরকারের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিরি সভাপতি নাসির হোসেন সীলসহ স্বাক্ষর করে অতিথিদের দাওয়াত দেন। ঘটনার দিন দুপুরে বরের ভগ্নীপতি কুমিল্লা সেনানিবাসে কর্মরত সেনা সদস্য রিপনসহ অর্ধশতাধিক মেহমান গাড়ী বহর নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হয়। এসময় বর পক্ষসহ কনের বাড়িতে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পুলিশের কতিপয় সদস্যসহ তিন শতাধিক লোক বিয়ের আয়োজন শেষে খাওয়া দাওয়া শুরু করে।
বাল্য বিয়ের বিষয়টি পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেনকে মৌখিক ভাবে অবহিত করে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. বশির আহমেদ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তারের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মী ইসরাত জাহান মমতাজসহ সাংবাদিকরা কনের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্য বিয়ের সত্যতা পান। কিন্তু প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নিয়ে বরের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের লোকজন কনের বাড়ি থেকে চলে আসার পর ঘটনার দিন (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়) নাসির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বর কনেকে নিয়ে তার বাড়িতে চলে যায়।
Comments
আরও পড়ুন





