আধিপত্য বিস্তারে বাইশকুড়া বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় ইউপি সদস্যের পায়ের ৩টি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন

স্টাফ রিপোর্ট : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় বাইশকুড়া বাজারে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় টিকিকাটা ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন খান (৩২) ও দুবাই প্রবাসী মহিবুল্লাহ (৩০) গুরুতর জখম হয়েছে।
সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইসমাইল খানের ডান পায়ের পাতা কনিষ্ঠ তিন আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন ও প্রবাসী মহিবুল্লাহর ডান হাটুসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ গুরুতর জখম হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাদেরকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত সূত্রে জানা যায়, মঠবাড়িয়া ক্ষমতাসীন দলের বিবাদমান রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি হামলা ও ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে এবং দু’গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে ইউপি সদস্য ইসমাইল খান ও প্রবাসী মহিবুল্লাহ সহ কয়েকজন বাইশকুড়া বাজারে ইউসুফ মল্লিকের দোকানের সামনে চা খেয়ে গল্প করছিল। এসময় পূর্বে ওঁৎ পেতে থাকা দক্ষিণ ও উত্তর ভেচকী গ্রামের শামীম, জুয়েল, নান্টু, রাসেল ও আলামিন সহ ১২/১২জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
আহত প্রবাসী মহিবুল্লাহর ছোট ভাই ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল ড্রাইভার আমানউল্লাহ জানান, তার প্রবাসী ভাই মহিবুল্লাহর কাছে শামীম, জুয়েল, নান্টু কয়েকদিন আগে ১লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দেওয়ায় তার ভাইকে হুমকি দেয়। এঘটনায় তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ওই চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের পর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন জানান, এলাকায় গাঁজা, জুয়া এবং ইয়াবা ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় ইউপি সদস্য ইসমাইলের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী শামীমের বিরুদ্ধে থানায় ৪টি মাদক মামলা, নান্টুর বিরুদ্ধে স্থানীয় আনোয়ার মাতুব্বর হত্যা ও ডাকাতি মামলা সহ এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
অভিযুক্ত শামীমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি হামলার ঘটনায় কিছুই জানেনা বলে তিনি গতকাল বুধবার ঢাকায় আসছেন দাবী করে লাইনটি কেটে দেয়।
মঠবাড়িয়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই বিকাশ চন্দ্র দে জানান, রাজনৈতিক কোন্দলের জের ধরে হামলার ঘটনাটি ঘটছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িত ৩/৪ জনের বাড়ীতে অভিযান চালাই। কিন্তু ঘা ঢাকা দেয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তিনি আরও জানান, ঘটনায় জড়িত শামীম, নান্টু ও আলামিন সম্প্রতি একটি ভাংচুরের মামলায় জামিনে এসে আবার এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
মঠবাড়িয়া থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমিত্র সিনহা রায় জানান, আহতদের জখমের অবস্থা খুবই গুরুতর। ইউপি সদস্যের পায়ের জখমের কারণে স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হতে পারে।
মঠবাড়িয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাজহারুল আমিন (বিপিএম) জানান, এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
Comments
আরও পড়ুন





