অবরোধ শেষ হলেও সাগরে যেতে পারছে না জেলেরা

আমিনুল ইসলাম সাগর, শরণখোলা থেকে: ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে শুক্রবার (২৩জুলাই) মধ্যরাত থেকেই ফিশিং ট্রলার সাগরে ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। যার ফলে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও ইলিশ আহরণে যেতে পারছে না জেলেরা।
বাগেরহাটের শরণখোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ উপজেলার বিভিন্ন ঘাটে নোঙর করে আছে ট্রলারগুলো। বৈরী আবহাওয়ায় শুধু শরণখোলায়ই নয়, উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় আরো শত শত ট্রলার আবহাওয়ার কবলে পড়েছে।
একদিকে করোনা, আরেকদিকে ইলিশ মৌসুমের শুরু থেকেই দীর্ঘ দুই মাসের অবরোধে নিঃস্ব হয়েছে জেলে-মহাজনরা। তার ওপর অবরোধ শেষ হতে না হতেই আবহাওয়ার বৈরী আচরণ। এই ত্রিমুখী সংকটের মুখে লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে চরম হতাশায় পড়েছেন জেলে-মহাজনরা। সময়মতো সাগরে জাল ফেলতে না পারলে শুরুতেই লোকসানে পড়তে হবে তাদের।
এদিকে, অবরোধের অবসর সময়ে জাল-ট্রলার মেরামত করে সাগরে যাওয়ার উপযোগী করতে একেকজন ট্রলার মালিক দুই-তিন লাখ টাকা করে খরচ করেছেন। জ্বালানী তেল, রসদ সামগ্রী কেনা এবং জেলে শ্রমিক ও মাঝিদের কারো ১০ হাজার আবার কারো কারো ২০-২৫ হাজার টাকা অগ্রিম দিতে হয়েছে। এসব টাকার বেশিরভাগই মহাজনদের কাছ থেকে দাদন ও সুদে এনেছেন তারা। একটি ট্রলার সাগরে রওয়ানা হওয়া পর্যন্ত সব মিলিয়ে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে তাদের।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার রাজৈর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু ফিশিং ট্রলার ঘাটে নোঙর করে আছে। রসদ সামগ্রী, বরফ, জ্বালানী বোঝাই করে জেলেরা অলস সময় পার করছেন।
এসময় কথা হয় এফবি রুবেল ট্রলারের মালিক মো. আব্বাস আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, সাগরের অবস্থা খুবই খারাপ। এ অবস্থায় জাল ফেলা দূরের কথা, ট্রলার টেকানোই মুশকিল হবে। তাই আবহাওয়া ভালো হলে তবেই রওয়ানা হতে হবে।
মৎস্য আড়ৎদার মো. কবির হাওলাদার জানান, একেকটি ট্রলার সাগরে যাওয়ার উপযোগী করতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় হয়। দীর্ঘদিন অবরোধ শেষে সাগরে যাওয়ার জন্য সবাই প্রস্তুত। এরই মধ্যে সাগর উত্তাল হওয়ায় তাদের সমস্ত আশা ভঙ্গ হয়ে গেছে। প্রত্যেক ট্রলার মালিক মহাজনদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা দাদন ও সুদে এনে জাল ট্রলার মেরামত করেছেন। এখন তারা হতাশায় রয়েছেন।
জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জনান, অবরোধ শেষে অনেক আশা নিয়ে সাগরে রওয়ানা হবেন জেলেরা কিন্তু বৈরী আবহাওয়া তাদের সবকিছু মাটি করে দিয়েছে। সময়মতো সাগরে জাল ফেলতে না পারলে তাদের প্রত্যেক ট্রলার মালিককে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হবে।
Comments
আরও পড়ুন





