মারধর করায় ছেলের ওপর অভিমান করে মায়ের আত্মহত্যা
স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বামী পরিত্যাক্তা হতদরিদ্র সালেহা বেগমের ঈদ করা হল না। প্রতিবেশীদের দেয়া সেমাই-চিনি রান্না করা হলেও এইচএসসি পাশ করা একমাত্র ছেলে মুরাদ (২০) মায়ের ওপর হাত তোলায় সন্তানের ওপর অভিমান করে চালের পোকা নিধনের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ঘটনাটি ঘটেছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন শনিবার দুপুরে উপজেলার ৯নং সাপলেজা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ঝাটিবুনিয়া গ্রামে। নিহত সালেহা ওই গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়- চট্টগ্রামে গার্মেন্টে কাজ করার সময় সালেহা বেগমের পরিচয় ঘটে বরিশালের আলেকান্দার বাসিন্দা আনিছুরের সাথে। এরপর সুস্পর্কের জের ধরে (আনিস প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে) তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর চট্টগ্রাম ও বরিশালে সালেহাকে নিয়ে গেলে সেখানে প্রথম স্ত্রী টের পেলে সালেহার সাথে বনিবনা না হওয়ায় বাবার বাড়িতে একমাত্র পুত্র মুরাদকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। স্বামী আনিসুর রহমান ১ম স্ত্রীকে নিয়ে বরিশালের আলেকান্দায় থাকায় দ্বিতীয় স্ত্রী সালেহা (৪০) ওরফে সলেমান পিতা আব্দুস সাত্তারের ঝাটিবুনিয়া গ্রামের বাড়িতে পুত্রকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাস করছে। কলেজ পড়–য়া ছেলে মুরাদের মূখের দিকে তাকিয়ে অন্যত্র বিয়েও করেননি।
ঈদের দিনে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি বিয়ে করা স্ত্রীর কথা অনুযায়ী মায়ের ওপর হাত তোলে মুরাদ। এতে অভিমান করে ঘরে থাকা চালের ট্যাবলেট খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি ঘটলে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (২৩ এপ্রিল) রাতে সালেহা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। লাশের ময়না তদন্ত শেষে রোববার সন্ধ্যায় জানাযা শেষে বাবার বাড়িতে লাশ দাফন করা হয়। এসময় এলাকার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে।
থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন- বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।