মঠবাড়িয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ
মঠবাড়িয়া সংবাদ ডেস্ক: মঠবাড়িয়ায় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণীর মডেল টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়া শুনা ভেঙ্গে পড়ছে।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেলেও দায়সারা প্রতিবেদন দিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
স্থানীয় অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, উপজেলার ১২৩ নং সোনাখালী বন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সম্প্রতি সমাপ্ত পঞ্চম শ্রেণীর মডেল টেস্ট পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসরাত জাহান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫টি বিষয়ের (ইংরেজী, বাংলা, সমাজ, অংক ও বিজ্ঞান) প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগ করেছেন অন্যান্য বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে ক্লাশ চলাকালে ব্যক্তিগত কাজ করানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে।
বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান জানতে পেরে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় উত্থাপন করে ইউআরসি ইন্সেট্রাক্টর আবু ইউসুফ মোঃ সরওয়ার হোসেন ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কিরণ চন্দ্র রায়সহ ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি গত রোববার সকালে (১২ নভেম্বর) ওই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কেন্দ্রভ্্ুক্ত শিক্ষকদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেন।
৮৭ নং মধ্য সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম জানন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমান পেয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি ওই পরীক্ষা কেন্দ্রসহ আরও তিনটি কেন্দ্রের মোড়ক পরীক্ষা করে গড়মিল দেখতে পান। তিনি আরও জানান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কিরন চন্দ্র রায়ের কাছে ফাঁশ হওয়া প্রশ্নপত্রের পাঁচটি মোড়ক জমা থাকলেও তদন্তের সময় ওই পাঁচটি মোড়ক দেখাতে ব্যর্থ হন এবং ওই মোড়ক প্রধান শিক্ষক ইসরাত জাহানের কাছে রক্ষিত আছে বলে তিনি দাবী করেন।
অপরদিকে ওই শিক্ষিকা ইসরাত জাহান মোড়কগুলো ছিড়ে ফেলার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি আমাকে হেয় প্রতিপন্ন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিদ্যালয় থেকে এক শিক্ষার্থী চলে যওয়ায় ৮৭ নং সোনাখালী সরকারী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার সাথে আমার মনোমালিন্নের জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে স্কুল থেকে চলে যাওয়া ছাত্রী রুক্সানা আক্তারের বাবা শাহীন মিয়া জানান, মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে বাজার করতে গিয়ে দেখি ক্লাশ বন্ধ রেখে আমার মেয়ে ওই শিক্ষিকার বাজার করছেন। এছাড়াও আমার মেয়েকে দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষিকা বেবী নাজনীন তার বাচ্চার মলমূত্র ত্যাগর কাঁথা ধৌত করাচ্ছে। মেয়েকে দিয়ে কাজ করানোর প্রতিবাদ করলে আমাকে গালাগালি করে। একারণে মেয়েকে অন্যত্র ভর্তি করিয়েছি।
আর এক স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া আক্তারের রিক্সা চালক বাবা হাফিজুর রহমান জানান, রিক্সা চালিয়ে মেয়েকে লেখাপড়া করাই। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বেবী নাজনীন আমার মেয়েকে দিয়ে তার মেয়েকে ফিটার খাওয়াচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমীন জানান, অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা শিক্ষা কমিটির মাধ্যমে ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুর রহমান জানান, গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদ পেলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।