বিজয়ের দু’দিন পর ১৮ ডিসেম্বর মঠবাড়িয়া হানাদার মুক্ত হয়
স্টাফ রিপোর্টার ঃ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া তখনও ছিল স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের দখলে। বিজয়ের দু’দিন পর ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রতিরোধের মুখে মঠবাড়িয়া হানাদার মুক্ত হয়।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত ভোররাতে সুন্দরবন অঞ্চলের সাব-সেক্টরের ইয়ং অফিসার ও মঠবাড়িয়া মুক্তি বাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আলতাফ হোসেন আকনের নেতৃত্বে ৩৭জন প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা সুন্দরবন অঞ্চল হতে মঠবাড়িয়ায় রওনা দিয়ে আমড়াগাছিয়া অবস্থান করে। পরে তারা এ সংগঠিত মুক্তিযোদ্ধারা মঠবাড়িয়ায় স্বাধীনতা বিরোধীদের পরাস্ত করতে মঠবাড়িয়া শহর হতে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কালিরহাট বাজারে অবস্থান নেন। অপর দিকে শরণখোলা থেকে ওই রাতে ১২০ জনের সশস্ত্র একটি মুক্তিযোদ্ধার দল কালিরহাট বাজারে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগ দেন। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি পায়। মুক্তিযোদ্ধাদের ওই সশস্ত্র অবস্থান টের পেয়ে স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। ওই রাতেই স্বাধীনতা বিরোধিরা রাজাকার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সমঝোতার চেষ্টা চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে স্বাধীনতা বিরোধীদের আত্মসম্পর্নের প্রস্তাব পাঠান। ১৮ ডিসেম্বর তৎকালীন পাকবাহিনীর সিআই জালাল উদ্দিন তার পুলিশ, রাজাকার ও আলবদরসহ ৬০ জন সদস্য নিয়ে ওই দিন বিকাল চারটায় স্থানীয় কালীরহাটে মঠবাড়িয়া থানা মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আলতাফ হোসেনের আকনের কাছে আত্মসমর্পণ করলে বিনা রক্তপাতে মঠবাড়িয়া অঞ্চল শত্রু মুক্ত হয়।
এরপর ১৮ ডিসেম্বর বিকালে কালিরহাটে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা মঠবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের শ্লোগান দিতে দিতে বীরদর্পে মঠবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করেন। এভাবে কোন রক্তপাত ছাড়াই ১৮ ডিসেম্বর মঠবাড়িয়া শত্রু মুক্ত হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর স্থানীয় শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে মুক্তিযোদ্ধদের এক সংবর্ধনা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।