বাল্য বিয়ে ঠেকানো কিশোরী ছাত্রীকে সংবর্ধণা ও অর্থ সহায়তা প্রদান
স্টাফ রিপোর্টার : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নুশরাত জাহান মিম নামের ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া মাদ্রাসা ছাত্রীর অভিভাবকরা দারিদ্রতার অজুহাতে বাল্য বিয়ের আয়োজন করেছিল। পড়ালেখা অবস্থায় ইচ্ছার বিরুদ্ধে আয়োজন করা নিজের বাল্য বিয়েতে বাধা দেন ওই কিশোরী। কিন্তু অভিভাবকরা মেয়ের মতামত উপেক্ষা করে ছেলে পক্ষের স্বজনরা আংটি পড়িয়ে উভয় পক্ষ বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে। অবশেষে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকাতে কিশোরী ওই ছাত্রী গত ১৩ ডিসেম্বর সোমবার রাতে মঠবাড়িয়া থানায় হাজির হয়ে পুলিশের সহযোগীতা চাইলেন। অবশেষে পুলিশ ওই বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দেয়। এ সংবাদটি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করার পর ভাইরাল হয়। এ সাহসি কাজের জন্য প্রতিবাদি নুশরাত জাহান মিমকে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসন সাহসিকতা সংবর্ধনা প্রদান করেন। এসময় মিম এর হাতে ক্রেষ্ট ও নগদ অর্থ তুলে দেয়া হয়।
উপজেলা শহীদ মাখন লাল দাশ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডাঃ আলী হাসান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাখাওয়াত জামিল সৈকত, অফিসার ইনচার্জ মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. বাচ্চু আকন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান সিফাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ আলমগীর হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রূপ কুমার পাল, প্রেসকাবের সভাপতি জাহিদ উদ্দিন পলাশ, সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম আজাদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু প্রমূখ।
মিম উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের ওয়াহেদাবাদ গ্রামের নূর-আলা নূর ইসলামীয়া দাখিল মাদাসার অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। সে ওই গ্রামের অটোরিক্সা চালক আব্দুর রহমানের মেয়ে। তার মা সম্প্রতি জর্ডান থেকে দেশে এসেছেন। বক্তারা বাল্য বিয়ে ঠেকাতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুশরাত জাহান মিম এর সাহসী কাজের প্রসাংসা করেন ও মিমকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির আহম্মেদ মাদ্রাসা ছাত্রী মিম এর মা হতদরিদ্র রোকসানাকে আয়বর্ধণ মূলক প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্তসহ সেলাই মেশিন কিনে দেবার সিদ্ধান্তসহ নেয়া হয়েছে। যাতে মিম‘র লেখা-পড়ার জন্য অর্থিক খরচ চালাতে পারে।