জমির মালিকানা নিয়ে রশি টানা-টানি ॥ দখলে প্রভাবশালীরা
স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রকাশ্যেই প্রশাসনের নাকের ডগায় পৌর শহরের সরকারি সম্পত্তি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছে ভূমিদস্যুরা। জমির মালিকানা নিয়ে রশি টানা-টানিতে দখলের সুযোগ নিয়েছে জবরদখলকারীরা। এ সকল সম্পত্তি কার? এ নিয়ে নিয়মিতভাবে পৌর কর্তৃপক্ষ, ভূমি অফিস, জেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড পরস্পরের ওপর অভিযোগ চাপিয়ে দিচ্ছেন। এ সুযোগে ভূমিদস্যুরা সম্পত্তি দখল করে নির্মান করছে পাকা স্থাপনা।
পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ডের স্লুইজগেট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সরকারি সম্পত্তিতে প্রতিযোগিতা করে স্থানীয় হানিফ কাজী, আলমগীর কাজী, বাবুল চৌকিদার, আবুল বাশার, মো. আলী হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন, মাস্টার হুমায়ূন কবির বর্তমানে পাকা স্থাপনা ও পাকা ভবন নির্মান করছে। এরা সকলেই জানিয়েছেন পৌরসভা থেকে অনুমতি নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে বহু স্থাপনার পাকা নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছালেক বলেন, পৌরসভা থেকে কাউকে কোন পাকা স্থাপনা নির্মানের অনুমতি দেয়া হয়নি। তারা অবৈধভাবেই গায়ের জোরেই পাকা স্থাপনা নির্মান করছে।
স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর হেমায়েত উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের উদাসীনতায় অনেক আগেই সরকারি এ সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে। বর্তমানে বহুসংখ্যক প্রভাবশালীরা প্রতিযোগিতা করে পাকা স্থাপনা ও পাকা ভবন নির্মান করছে। তা দেখার যেন কেউ নেই?
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিপন বিশ^াস বলেন, ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার এবং ভুমি সহকারী কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে জানা গেছে ওই জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে। আমার জানামতে ওই নির্মান কাজও বন্ধ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা এ সম্পত্তি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দাবী করে বলেন, উপরের মহল ম্যানেজ করে দখলদাররা এ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র দাস- এর মুঠোফোনে একাধিক কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বালী জানান, ওই সম্পত্তি জেলা পরিষদের।
পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী রেবেকা খানম জানান, আমি ঘটনাস্থলে সার্ভেয়ার পাঠাচ্ছি। ওই সম্পত্তি জেলা পরিষদের আওতায় হলে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।
জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ওই সম্পত্তি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। সরকারি সম্পত্তি বেদখল হওয়া দুঃখজনক। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে স্ব-স্ব দপ্তরের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।