ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় অবৈধ ইট পাঁজা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বনজ ও ফলদ গাছ পূড়ে পরিবেশ দূষণ করে অবৈধ পাঁজায় ইট পোড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মধ্য সোনাখালী এলাকায় স্থানীয় শাহ আলম গাজীর মালিকাধীন এস.কে.এম নামের এ অবৈধ পাঁজা দ্রুত অপসারণের দাবিতে পাঁজা সংলগ্ন রাস্তার উপরে প্রায় অর্ধশত ক্ষতিগ্রস্তরা বিক্ষোভ করে।
প্রশাসন মোবাইল কোর্টের জরিমানা করে পাঁজা বন্ধ করে দেয়ার পর পূনরায় পাঁজায় ইট কাটার খবর পেয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকের স্থানীয় সাংবাদিকরা পেশাগত কাজে সরেজমিনে গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এলাকাবাসীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় বিক্ষুব্ধরা এ ঘনবসতীপূর্ণ মধ্য সোনাখালী এলাকায় বনজ ও ফলদ বাগানের মধ্যে এ অবৈধ পাঁজায় গাছ ব্যবহার করায় বন উজাড় ও পরিবেশ ধূষিত হওয়া, ফল ঝড়ে পড়া, কালো ধোয়ায় মাছ মরে যাওয়া, শিশু ও বৃদ্ধদের শ^াস কষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ এনে দ্রুত অপসারণের দাবি জানান।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা অভিাযোগ করেন- পাঁজার অসাধু মালিক শাহ আলম গাজী আইনের প্রতি বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে আমড়াগাছিয়া– ও সাপলেজা ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী সরকারি খালের বিশ^াস বাড়ি হতে নলী খালে বাঁধ দিয়ে জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলে ওই খালের মাটি কেটে অবৈধ পাঁজায় ব্যবহার করছে।
স্থানীয় বাদুরতলীর বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আ. বারেক গাজী (৭১) বলেন, এ অবৈধ পাজা এখন আমাদের মরণকাটা। পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ পাঁজার ধোঁয়ায় ফলদ গাছের ফল ঝড়ে পড়ছে এবং আমরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি।
সাবেক ইউপি সদস্য আ. মালেক গাজী (৭০) বলেন, গতবছর থেকে আমার বসতবাড়ি ও বাগান সংলগ্ন এ পাঁজার কারনে বাগানের সুপারি ও নারিকেল ফলন কমে গেছে এবং যখন পাজায় আগুন দেয় তখন পুকুরের মাছও মরে যায়।
স্থানীয় ডা. রুস্তম আলী ফরাজী কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী মনিরা (২২) বলেন, আমরা এ দূষণকারী পাঁজার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক পিরোজপুরের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে চলতি মাসের ১২ ডিসেম্বর নির্বার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট আল ইমরান খান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ওই পাঁজার মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং এ অবৈধ পাঁজা বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু একদিন পর প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ওই পাঁজায় শাহ আলম পূনরায় ইট কাটা শুরু করলে জেলা প্রশাসককে আবারও লিখিত অভিযোগ করি।
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান (৪৬) বলেন, পাঁজা সংলগ্ন খালে বাঁধ দিয়ে মাটি কাটার ফলে ওই গ্রামের পুকুরে জোয়ারের পানি উঠতে না পারায় পানি শুন্য হয়ে পড়ছে এলাকার পুকুরগুলো।
ওই এলাকার গৃহবধু সালমা সুলতানা (৩৫) বলেন, গতবছর যখন এ ইটের পাঁজায় আগুন ধরানো হয় তখন আমার তিন শিশু সন্তান স্বাস কষ্ট ও ডায়েরিয়ায় মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
পাঁজা মালিক শাহ আলম গাজী সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের উপর তেরে গিয়ে বলেন, আমার পাঁজায় স্থানীয়দের কোন ক্ষতি হচ্ছেনা দাবি করে বলেন, মঠবাড়িয়ায় অনেক ইট পাঁজায় ইট পোড়ছে আমিও ইট সাজাচ্ছি পোড়াতে পারলে পোড়াবো।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ওই পাঁজার বিরুদ্ধে আগেও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে অর্থ জরিমানা করে বন্ধ করা হয়েছিল। পূনরায় ইট পোড়ার চেষ্টা করলে দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।