করোনা উপসর্গে রোগীরা যে কারণে ফোনে ডাক্তারের চিকিৎসা নিবেন…. ডা. ফেরদৌস ইসলাম
করোনা উপসর্গের রোগীদের বাড়িতে বসে ফোনে চিকিৎসা নেয়া এবং হোম আইসোলেশনে থাকতে বলার কারণ:
** প্রায় ৮০% করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃদু উপসর্গ বা অনেক ক্ষেত্রে কোন উপসর্গ থাকে না। মৃদু উপসর্গ, যেমন- হালকা জ্বর, গা ব্যথা, দূর্বলতা বা কাশি যেটা সাধারণ চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায়।
** কিন্তু ধরুন এই রোগী (ক) যদি কোন গণপরিবহনে করে ডাক্তারের চেম্বারে আসেন, তাহলে ঐ পরিহনের অন্যদের আক্রান্ত করতে পারেন।
** চেম্বারে এসে সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষাকালীন তার পাশে থাকা অন্য রোগীকে/ স্টাফকে আক্রান্ত করতে পারেন।
** ঔষধ কিনতে গিয়ে ফার্মাসিস্টকেও আক্রান্ত করতে পারেন।
** অথবা এমনো হতে পারে তিনি নিজে (ক) করোনা আক্রান্ত নন, কিন্তু এই আসা-যাওয়ার পথে কিংবা হসপিটাল/চেম্বার থেকে অন্য একজনের (খ) থেকে আক্রান্ত হয়ে গেলেন। তারপর বাড়িতে গেলেন, বাসায় যদি বয়োবৃদ্ধ লোক থাকে এবং তারা আপনার থেকে আক্রান্ত হয়ে যান, তখন কি হবে ভাবুন।
** বাকী ২০% রোগীর মাঝারী ও মারাত্মক উপসর্গ দেখা যায় এবং হাসপাতালে চিকিৎসা করতে হয়, তার মধ্যে ৫% রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট লাগতে পারে।
তবে আপনি অবশ্যই চিকিৎসক এর সাথে দ্রুত ভিত্তিতে যোগাযোগ করবেন, যদি-
* শ্বাসকষ্ট হয় (যাদের শ্বাসকষ্টের রোগ আগে ছিলোনা)
* সাধারণ হাটা চলাতেও হাপিয়ে ওঠেন/মারাত্মক দূর্বল লাগে
* ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্থুলতা বা কিডনী রোগ থাকে।
* আপনার চিকিৎসক প্রয়োজন হলে আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলবেন।
* একদিনের জ্বর, কাশি নিয়েই যদি আপনারা হাসপাতালে চলে আসেন, তাহলে ৬ মাসেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবেনা। যারা ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তারা যেন অন্য কাউকে ভাইরাস ছড়াতে না পারেন, সেটাই মূখ্য উদ্দেশ্য।
* করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুষম খাদ্য দরকার, যেটা বাড়িতে বসে নিশ্চিত করা সহজ।
* অধিকাংশ করোনা আক্রান্ত রোগীরাই মানসিক ভাবে দূর্বল হয়ে পড়েন, পরিবারের কাছাকাছি থাকলে সেটা অনেকাংশে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
* করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চেইন বন্ধ করতে হলে সবার সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র লকডাউন কিংবা জোনে বিভক্ত করে সেটা সম্ভব নয়। তাই অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না, বিশেষত বৃদ্ধরা এবং মৃদু উপসর্গের রোগীরা বাসায় বসেই চিকিৎসা নিন।
* করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে এসেও যদি আমরা উদাসীন থাকি, তাহলে নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তার দিকে তাকিয়ে থেকেও নতুন কোন আশার আলো দেখতে পাবোনা।
লেখক-
ডা. ফেরদৌস ইসলাম
আবাসিক মেডিকেল অফিসার
মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স