অবৈধ বাঁধ অপসারণ দাবিতে গ্রামবাসির মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামে ‘দোগনা’ ও ‘ভূতার’ খালে প্রভাবশালীদের দেওয়া বাঁধ অপসারণের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
শনিবার (৬ আগষ্ট) উপজেলার ছোটশৌলা ও বড়শৌলা গ্রামবাসি স্থানীয় গাজীরহাট সংলগ্ন বেড়িবাঁ^ধে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করে খালের অবৈধ বাধ অপসারণের দাবি জানান। এতে স্থানীয় পাঁঁচ শতাধীক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ব্যবসায়ি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
শেষে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান গাজীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন, স্থানীয় কৃষক ক্লাবের সভাপতি মো. শাহ আলম আকন, কৃষক মো. সাব্বির হোসেন, মো. মিরাজ গাজী, আব্দুল লতিফ ফকির ও মো. হানিফ খান প্রমূখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের প্রবাহমান ¯্রােতধারার ‘দোগনা’ ও ‘ভূতার’ খালে কতিপয় প্রভাবশালী অবৈধভাবে খালের কয়েকটি স্থানে অবৈধ বাধ দেয়। এতে খাল দুটির পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে এলাকার প্রায় তিন হাজার একর কৃষিজমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। খাল নব্যতা হারিয়ে এক দিকে সেচকাজ ও মাছের চারণক্ষেত্র ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
বিষখালী-বলেশ্বর দুই নদীর সংযোগ ‘দোগনা’ ও ‘ভূতার’ খালে প্রভাবশালী একটি মহলের বাঁধের কারণে খাল দু’টিকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক মানুষের নীরব আর্তনাদ উঠেছে। ভুক্তভোগিরা একাধিকবার প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করলেও দুই খালের বাধ অপসারণে কোনো সাড়া মিলছেনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষখালী-বলেশ্বর দুই নদীর সংযোগ খাল বিষখালী নদী থেকে উঠে ঝালকাঠির কাঠালিয়া ও বরগুনার বামনা উপজেলার মধ্যস্থান আমুয়া লঞ্চঘাট থেকে দুই পাশে চারটি উপজেলা রেখে সোজা প্রায় ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে তুষখালী লঞ্চঘাট হয়ে বলেশ্বর নদীতে মিলেছে। এই ২৫ কিলোমিটার খালের দুই পাশে চারটি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রাম পাশাপাশি অবস্থিত। খাল দু’টিকে কেন্দ্র্র করে লক্ষাধিক মানুষ জীবন জীবিকা, অর্থনৈতিক নির্ভরতা, মৎস্য শিকার, নৌ-যাতায়াতসহ বহুমুখী সুবিধা ২শ বছর থেকে ভোগ করে আসছে। কিন্তু এই সংযোগ খাল মধ্যবর্তী স্থান মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামের দোগনা খাল ও দোগনা খালের শাখা ভুতার খালে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সুবিধা মত প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে একাধিক স্থানে বাঁধ দিয়ে খাল ভরাট করে ফেলেছে। কেউ মাছের চাষ করেছে, আবার কেউ দখল পাকা সড়ক নির্মান করে নিয়ে যাতায়াত করেছে।
খালটির পূর্বপাশ দিয়ে নতুন করে বেরিবাধ দেওয়ার ফলে জলাবদ্ধতায় ফসলহানি ঘটছে। বর্তমানে বাঁধের তিন ফসলি জমি এখন এক ফসলিতে জমিতে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই স্থায়ী জলাবদ্ধতায় ভুগছে বাদুরা, বড়শৌলা, ছোটশৌলা সহ অন্তত পাঁচ গ্রামের মানুষ।
অন্যদিকে শুকনো মৌসুমে তীব্র পানি সঙ্কটে নানা রকম কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দেশীয় মাছ ও ফসলের উৎপাদন দারুনভাবে হ্রাস পেয়েছে। এলাকার শত শত মৎস্যজীবী বেকার দিন কাটাচ্ছেন।