নিজের বাল্য বিয়ে নিজেই রুখে দিয়ে ইতিহাস গড়ল ৯ম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী ফারজানা

স্টাফ রিপোর্টার : তিন সহপাঠিদের সহযোগিতায় নিজের বাল্য বিয়ে পন্ড করে দিলেন এক শিক্ষার্থী। মেয়ের অমতে অভিভাবকদের ঠিক করা বাল্য বিয়ে বন্ধ করার ঘটনায় এলাকার সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি মঙ্গলবার সকালে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর এলাকায় ঘটেছে। ওই বিয়ের ঠেকানোর সাহসীকতার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জি.এম সরফরাজ ওই স্কুল ছাত্রীসহ চার সহাপাঠিকে ৪টি বাইসাইকেল পুরস্কার দেয়ার ঘোষনা করেন।
জানাযায়, স্থানীয় হাতেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ও শহরের দক্ষিণ বন্দর এলাকার সৌদি প্রবাসী ফারুক শিকদারের মেয়ে ফারজানা (১৪) এর সাথে দক্ষিণ সাপলেজা গ্রামের মৃত: আ. আজিজ মুন্সির ছেলে সাপলেজা মডেল হাই স্কুলে অফিস সহায়ক ইয়াহিয়া (২৮) এর বিয়ে ঠিক করে। ওই শিক্ষার্থীর মতামত না নিয়ে মা রেকসনা বেগম, খালা ও নানী মিলে আগামী শুক্রবার এই বিয়ের দিন ধার্য করে। বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থী ফারজানা তার একই ক্লাসের সুলতানা ইসলাম (১৪), রেজমি (১৪) এবং ১০ম শ্রেণীর দ্বিপা চৌধুরী (১৫) মঙ্গলবার দুপুরে বিয়ে বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। পরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তার ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা আখলাকুর রহমান উভয় পক্ষকে হাজির করেন। এসময় ওই ছাত্রীকে প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেয়ার মর্মে মা ও খালার মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেন এবং চার শিক্ষার্থীর বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য চারটি বাইসাইকেল পুরস্কার দেয়ার কথা বলেন। লিখিত অভিযোগ পেয়ে ইউএনও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পেয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তার, সমাজ সেবা কর্মকর্তা আখলাকুর রহমান ও স্টেপস্ মাঠ সমন্বয়কারী ইসরাত জাহান মমতাজ এর সহযোগিতায় ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় বর ও কনের অভিভাবকদের হাজির করে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেন।
সাপলেজা মডেল হাই স্কুলে প্রধন শিক্ষক এমএ রাশেদ জানান, কর্মচারী কম বয়সি একটি মেয়েকে বিয়ে করছে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ইউএনওর দপ্তরে হাজির করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জি.এম সরফরাজ জানান, মঠবাড়িয়াতে প্রথম বারের মত স্কুল ছাত্রী ও সহপাঠিদের সহযোগিতায় নিজের বাল্য বিয়ে বন্ধ করে সাহসী ভূমিকা রাখায় তাদেরকে পুরস্কারের ঘোষনা দেই।
Comments
আরও পড়ুন





