এসএসসি পরীক্ষার্থী নববধূর মেহেদীর রং না মুছতেই হত্যা ॥ শিক্ষক শ^শুর শাশুড়ি ও ননদ গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মারিয়া আক্তার তন্বী (১৬) নামের এসএসসি পরীক্ষার্থী নববধূকে হত্যার অভিযোগে নিহতের ভাই বাদী হয়ে স্বামী, শ^শুর, শাশুড়ি ও ননদসহ চার জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাই অনার্স পড়–য়া কলেজ ছাত্র মেহেদী হাসান বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারী) সকালে থানায় এ হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। আসামীরা হলো- নিহত স্কুল ছাত্রী তন্বী আক্তারের স্বামী পৌর শহরের ৩ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ মিঠাখালীর বাসিন্দা মিনহাজুর রহমান রাব্বি, শ^শুর সরকারী হাতেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান শিকদার (৬২), শাশুড়ী শিরিন বেগম (৫৫) ও ননদ মাকসুদা আক্তার মুনা (৩০)। মামলা দায়েরের আগে এ ঘটনার পর নবধূর স্বামী রাব্বি পলাতক থাকলেও পুলিশ মঙ্গরবার দুপুরে শহরের ৩নং ওয়ার্ড দক্ষিণ মিঠাখালীর বসত বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩জনকে গ্রেপ্তার করে। নিহত তন্বী উপজেলার ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের দুবাই প্রবাসি হাবিব হাওলাদারের মেয়ে এবং মঠবাড়িয়া কেএম লতীফ ইনষ্টিটিউশনের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানা পুলিশ মারিয়া আক্তার তন্বীর লাশ উদ্ধার করে আজ সকালে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়।
থানা ও নিহত তন্বীর চাচা ফোরকান মিয়া জানান, কেএম লতীফ ইনষ্টিটিউটের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তন্বীর সাথে রাব্বির গত ৩ মাস আগে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায় তারা ঢাকায় পালিয়ে যায়। পরে ত্বন্নীর নামে ভূয়া কাগজ দিয়ে কাবিননামা তৈরী করে তাদের বিয়ে দেয় রাব্বির স্বজনরা। এ খবরে তন্বীর মা মোর্শেদা বেগম (৪৫) মেয়ে চলে যাওয়ার কষ্টে গত অক্টোবরের-২২ শেষ দিকে স্ট্রোক করে মারা যান। পরে ৩ নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মঞ্জুর রহমান শিকদার ও ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান মিলনের মধ্যস্থতায় সম্প্রতি তাদের পুনরায় বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে থেকে তন্বী কয়েকদিন সুখে শান্তিতে থাকলেও তা বেশীদিন স্থায়ী হয়নি। মেহেদীর রং না মুছতেই তিন মাসের মধ্যে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। তন্বী তার ভাই মেহেদীকে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহের বিষয়ে ফোন দিয়ে জানাত। গতকাল সোমবার সকালে ভাইকে স্বামীর বাড়িতে যেতে বললে, তন্বীর ভাই ব্যস্ত থাকায় যেতে পারেনি। বিকেলে আবারও যেতে বললে তন্বীর ভাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে বোনের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মেহেদী সাংবাদিকদের আরও জানান- কয়েকদি সুখে থাকলেও তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে বোন জামাই রাব্বি ও তার শ^শুর ও শাশুড়ি ও ননদ মঙ্গলবার দিনভর নির্যাতন শেষে ঘরের একটি কক্ষে আটকিয়ে তন্নীকে শ^াসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়।
তন্বীর শ^শুর গ্রেফতারকৃত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মজিবুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, বাবা হলেও সুসন্তানের পিতা হতে পারেননি। তাই বুড়ো বয়সে হাজত বাস করতে হল।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পলাতক রাব্বিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Comments
আরও পড়ুন





