আ’লীগের সাইনবোর্ড টানিয়ে জমি দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্থানীয় মিরুখালী বাজার সংলগ্ন বাধের সাফ কবলা মুলের জমিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাইন বোর্ড টানিয়ে জমি দখল করে দোকান ঘর উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নেতা ইলিয়াছ উদ্দিন হেলাল মুন্সী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। জবর দখলকারী প্রভাবশালীরা গত শুক্র,শনিবার ও গতকাল রোববার তিনদিন ধরে উপজেলার সীমান্তবর্তী ৩নং মিরুখালী ইউনিয়ন বাজার ও ৪নং দাউদখালী ইউনিয়ন সংযোগ খালের বেরিবাধেঁর দু’পারে পাইলিং দিয়ে জমিতে ভরাট করে দোকান ঘর দখল করে দোকান নির্মানের চেষ্ঠা চালায়। জমির মালিকরা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে প্রশাসন কতৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান- মিরুখালী বাজারের জে,এল ২৬ নং নাপিতখালী এস,এ ১০৪ নং খতিয়ানের ১১৯৪, ১১৯৫ নং দাগের সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক অতুল চন্দ্র হালদারের কাছ থেকে সাফ কবলা দলিল মূলে ৫.৫০ শতাংশ জমি ১৯৮০ইং সনে দাউদখালী ইউপির ৬নং ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন আহসাব মেম্বার মালিকানা প্রাপ্ত হন। ওই জমিতে গায়ের জোরে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হেলাল মুন্সী ও দাউদখালী ইউপির ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যা মনিরা আক্তারের স্বামী যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী জাকির, জামাল হোসেন মুন্সী ও মোয়াজ্জেম মেম্বরের ছেলে আলিমের নেতৃত্বে একদল লোক ২ জুন শুক্রবার থেকে তিন দিন ধরে প্রকাশ্যে বেরি বাঁেধর উপর ইউপি সদস্য আসাহাব, ব্যবসায়ী নিখিল চন্দ্র হালদার ও বিমল চন্দ্র হালদারের প্রায় ৪০লক্ষ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জমি জবর দখল করে দোকান ঘর উত্তোলনের কাজ শুরু করেন। ভূক্তভোগীরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈকত রায়হানকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক তিনি অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেন।
স্থানীয়রা জানান- প্রভাবশালীরা ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড ও নাম ভাঙ্গিয়ে ঘাপটি মেরে থাকা ভূমি দস্যুরা ঘর উত্তোলনে পাঁয়তারা করলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিনে পরিদর্শন করলে তার সত্যতা পান। এ ঘটনায় মিরুখালী বাজারের সর্ব স্তরের মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জমির মালিক নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন-২০১০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড মিরুখালী বাজারের এক জায়গার অনুমোদিত বাধ একটি প্রভাশালী মহল কতৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে তাদের জমির ওপর জোর পূর্বক বাধ নির্মান করেন। এর প্রতিবাতে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন সহ ওই সময়ে সংশ্লিষ্ঠ পানি মন্ত্রীর বরাবরে বাধ অপসানের আবেদন করেও কোন ফল পাইনি। এরপর দখলদারদের দখলের কারনে শেষ সম্বল জমিটুকু হারিয়ে তিনি নিস্ব। আ’লীগ নেতা পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ইলিয়াছ উদ্দিন হেলাল মুন্সী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- ওই জমির মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছেন। যার কাগজ আমার কাছে আছে। তিনি আরও বলেন, একটি মহল আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এখানে কোন ব্যক্তি মালিকানা জমি নেই। আমি এ দখলের ব্যাপারে জড়িত নই বরং দখলদারদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে।
উপজেলা আ’লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মিরুখালী ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্র্প্তা সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফ বলেন, উপজেলা আ’লীগের প্রভাবশালী এক নেতা ও দাউদখালী ইউনিয়ন আ’লীগের এক নেতার নেতৃত্বে দুই পাড়ের জমি দখল করে দোকান ঘর উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগ দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারেন যা ইউনিয়ন আ’লীগ পারে না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈকত রায়হান বলেন- ঘর উত্তোলনের বিষয়টি অবহিত হয়েছি এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়ে সকল কার্যক্রম বন্ধ দেয়া হয়েছে।
নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেহ সরকারী সম্পত্তি জবর দখল করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments
আরও পড়ুন





